আর্থিক দূর্ণীতি ও নানা অনিয়মের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে আনন্দ টেলিভিশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের ব্যক্তিগত সহকারী জাহিদ হাসানকে বহিষ্কার করা হয়েছে।গত ২৪ এপ্রিল বৃহস্পতিবার আনন্দ টেলিভিশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের নিকট জাহিদ হাসানের বিরুদ্ধে অর্থ কেলেংকারির একগাদা ফিরিস্তি জমা পড়ে। এ সময় টেলিভিশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিভিন্ন জেলা উপজেলা ও ব্যুরো প্রধানদের সাথে দীর্ঘ সময় কথা বলেন। পরে প্রতিনিধিদের অভিযোগের সত্যতা প্রাথমিকভাবে প্রমানিত হওয়াই তাকে প্রতিষ্ঠান থেকে অপসারণের সিদ্ধান্ত নেন।
ঐ দিনই জাহিদ হাসানকে অফিসিয়ালভাবে নোটিশ প্রদানের মাধ্যমে বহিস্কারের বিষয়টি নিশ্চিৎ করেন আনন্দ টেলিভিশনের এজিএম (এইচ.আর.এডমিন) মোঃ সাইফুল ইসলাম। একইসাথে জাহিদ হাসানের সহধর্মিণী আনন্দ টেলিভিশনের জামালপুর জেলার বিশেষ প্রতিনিধি মোনতাহেনা আশার প্রতিনিধিত্বও বাতিল ঘোষণা করেন বার্তা বিভাগ। টেলিভিশনের একাধিক সুত্র, প্রতিনিধিদের লিখিত অভিযোগ ও বার্তা বিভাগ সুত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালে বেসরকারী স্যাটেলাইট টেলিভিশন আনন্দ টিভি’র ব্যবস্থাপনা পরিচালকের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা প্রহরী হিসেবে যোগদান করেছিলেন সদ্য বহিস্কৃত জাহিদ হাসান।এক পর্যায়ে ব্যক্তিগত নিরাপত্তা প্রহরী থেকে ব্যক্তিগত সহকারী হিসেবে দায়িত্ব পান। প্রতিষ্ঠানের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারক এমডি হাসান তৌফিক আব্বাসের ব্যক্তিগত সহকারী (পি.এস) হিসেবে দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই মূলত জাহিদ হাসানের অনিয়মের যাত্রা শুরু হয়। প্রতিষ্ঠানের অত্যন্ত আস্থাভাজন হিসেবে পরিচিত ছিল জাহিদ। এই সুযোগকেই কাজে লাগিয়ে কয়েক বছরে কয়েক কোটি টাকার মালিক হন তিনি। মাত্র ২২ হাজার টাকা বেতনের চাকরি করলেও ঢাকায় বিলাসবহুল দামী ফ্লাটে থাকতেন তিনি। স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে বিলাসবহুল জীবন যাপন করতেন ঢাকায়। দামী গাড়ি, নিজ বাড়ি বকসিগঞ্জে লক্ষ লক্ষ টাকার সম্পত্তি ক্রয় করে সকলের নজর কাড়েন এই জাহিদ হাসান। সারাদেশে টাকার বিনীময়ে প্রতিনিধি নিয়োগ ভাণিজ্য থেকে শুরু করে প্রতিষ্ঠানের সকল কাজে আধিপত্য ছিল জাহিদের। প্রতি বছরে প্রতিনিধিদের কার্ড নবায়ন, বাৎসরিক আনন্দ উৎসবের নামে প্রতিনিধিদের কাছ থেকে জোরপূর্বক টাকা আদায়, ধর্মীয় উৎসবকে সামনে রেখে প্রতিষ্ঠানের বরাত দিয়ে ঈদের গিফট আদায়, প্রতিনিধি ছাঁটাইয়ের নামে ব্লাকমিল করে অর্থ আত্মসাত করত জাহিদ হাসান। তার বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুললে তাকে চাকরি হারানোর ভয়ভীতি দেখাতেন। অনেক প্রতিনিধি তার কথা না শোনায় তাদের প্রতিনিধিত্ব বাতিলও করেছেন বলে প্রশ্ন উঠেছে। যার কারনে ভয়ে কেউ মখ খুলতেও সাহস পাননি। সম্প্রতি জাহিদ হাসানের বিরুদ্ধে অর্থ কেলেঙ্কারির প্রমান পাওয়ায় তাকে প্রতিষ্ঠান থেকে স্থায়ীভাবে বহিস্কার করেন প্রতিষ্ঠানের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারক, ব্যবস্থাপনা পরিচালক হাসান তৌফিক আব্বাস। এক বার্তায় হাসান তৌফিক আব্বাস বলেন, আনন্দ টেলিভিশন কখনো অনিয়মকে পশ্রয় দেয়নি। যে কারও বিরুদ্ধে যখনি অনিয়মের প্রমান পেয়েছেন, তখনি তাকে বহিস্কার করা হয়েছে। তিনি জানান, প্রতিষ্ঠানের নাম ভাঙ্গিয়ে যে কাউকে অপরাধে জড়িত থাকার প্রমান পেলে তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক প্রদক্ষেপ নিতে তিনি বদ্ধ পরিকর।