গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলার বরমী ইউনিয়নের কায়েতপাড়া গ্রামে চোখ জুড়ানো এক সূর্যমুখী বাগান গড়ে তুলেছেন কৃষক কবির হোসেন। চারদিকে বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে হলুদ ফুলের সমারোহ, সূর্যের দিকে মুখ তুলে থাকা অসংখ্য সূর্যমুখী যেন প্রকৃতির এক স্বর্ণালি সৌন্দর্য উপহার।
প্রায় ৪ বিঘা জমিতে কবির হোসেন এই সূর্যমুখী বাগান গড়ে তুলেছেন। শুরুতে অনেক চ্যালেঞ্জ থাকলেও ধীরে ধীরে তিনি সফলতা পাচ্ছেন।
তিনি জানান, সূর্যমুখী চাষ লাভজনক এবং তুলনামূলকভাবে কম খরচে ভালো ফলন পাওয়া যায়। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর এই বাগান এখন পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে। স্থানীয়রা ছাড়াও দূর-দূরান্ত থেকে দর্শনার্থীরা আসছেন এই হলুদ ফুলের সৌন্দর্য দেখতে। বিশেষ করে বিকেলবেলা সূর্যের আলোতে ঝলমলে সূর্যমুখী ফুলের মধ্যে হাঁটার অভিজ্ঞতা সত্যিই মনমুগ্ধকর।
সূর্যমুখী ফুল থেকে তেল উৎপাদন করা হয়, যা দেশের খাদ্য শিল্পের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। পাশাপাশি, এর চাষ মধু উৎপাদনেও সহায়ক ভূমিকা রাখে। কৃষক কবির হোসেন জানান, সরকারি সহায়তা পেলে তিনি আরও বড় পরিসরে চাষ সম্প্রসারণ করতে চান। স্থানীয় কৃষি বিভাগ থেকে জানানো হয়েছে, সূর্যমুখী চাষের জন্য কৃষকদের প্রশিক্ষণ ও প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে। এটি শুধু সৌন্দর্যের জন্য নয়, কৃষকদের জন্য লাভজনক একটি ফসল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে পারে।
শ্রীপুরের কায়েতপাড়ার এই সূর্যমুখী বাগান এখন সৌন্দর্য ও সম্ভাবনার এক নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে। প্রকৃতি আর কৃষির অপূর্ব মেলবন্ধন এই বাগান যে আরও অনেক সম্ভাবনা সৃষ্টি করবে, তা বলাই যায়।
এ বিষয়ে শ্রীপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সুমাইয়া সুলতানা বলেন, সূর্যমুখী চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে প্রদর্শনী হিসাবে বিনামূল্যে বীজ ও সার দেওয়া হয়েছে। কৃষকদের স্বাবলম্বী করতেই সূর্যমুখী ফুল চাষে উৎসাহিত করা হয়েছে। যদি সফল হওয়া যায় আগামীতে সূর্যমুখীর চাষ অনেক বাড়বে। সূর্যমুখী একটি তেল ফসল হিসেবে বাংলাদেশে চাষ করা হচ্ছে। সূর্যমুখীর তেল ঘিয়ের বিকল্প হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এই তেল অন্যান্য ভোজ্য তেল থেকে ভাল এবং হৃদরোগীদের জন্য বেশ উপকারী। এবছর শ্রীপুর উপজেলায় প্রদর্শনী হিসাবে গাজীপুর ও বরমী ইউনিয়নে ৮ বিঘা জমিতে প্রদর্শন হিসেবে দেওয়া হয়েছে।