কুমিল্লার লাকসামে সুপরিচিত ‘ইউনি প্রাইম’ ব্রান্ডের মোড়ক নকল করে বোতলজাত ভোজ্য তেল বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। মা ট্রেডার্স নামের একটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ তুলেছেন ‘ইউনি প্রাইম’ নামক প্রতিষ্ঠানের পরিবেশকরা। নিয়মবহির্ভূত ভাবে ‘ইউনি প্রাইম’ ব্রান্ডের সয়াবিন ও সুপার তেলের লেভেল লাগিয়ে ভেজাল তেল বাজারে বিক্রি করায় ব্যবসায়ীক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন বলেও অভিযোগ তাদের।
জানা যায়, পবিত্র মাহে রমজানকে কেন্দ্র করে বেশকিছু প্রতারক চক্র নকল ও ভেজাল পণ্যের রমরমা ব্যবসা খুলেছে। বিভিন্ন পরিচিত কোম্পানির মোড়ক নকল করে ভেজাল সয়াবিন তেল, সেমাই, কোমল পানীয়, নকল ট্যাংক সহ বিভিন্ন পণ্য বাজারজাত করছে তারা। একই ভাবে বেশ কিছুদিন থেকে কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার মুদাফরগঞ্জ ইউনিয়নের বিজরা এলাকার ‘ইউনি প্রাইম’ সয়াবিন তেলের লেবেল নকল করে ভেজাল সয়াবিন ও সুপার তেল বিক্রি করা হচ্ছে।
অভিযোগ রয়েছে, কুমিল্লা ও নোয়াখালীর বিভিন্ন এলাকায় এই তেল বিক্রি করছে একটি চক্র। যার নিয়ন্ত্রণ করছেন লাকসাম ব্যাংক রোডের দৌলতগঞ্জ বাজারের মেসার্স মা ট্রেডার্সের মালিক মো: ইব্রাহিম খলিল। এবিষয়ে বিএসটিআই কুমিল্লা জেলা অফিস থেকে সতর্ক করা হলেও তা অমান্য করে নকল লেবেল ব্যবহার করে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন ইব্রাহিম খলিল।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইউনি প্রাইমের কয়েকজন পরিবেশক জানান, তারা এই পণ্যের পরিবেশক। তারা ছাড়া কুমিল্লাতে এই পণ্য আর কারো কাছে থাকার কথা নয়। ইউনি প্রাইমের মালিক ৫ই আগষ্টের পর পলাতক থাকায় উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। তবে মা ট্রেডার্সের মালিক মো: ইব্রাহিম ‘ইউনি প্রাইমের’ মোড়ক নকল করে ভেজাল সয়াবিন ও সুপার তেল বিক্রি করছে। যে কারনে সাধারণ ভোক্তারা ‘ইউনি প্রাইম’ লেবেল দেখে নকল পণ্য কিনে প্রতারিত হচ্ছেন। ফলে একদিকে ক্রেতারা প্রতারণরা শিকার হচ্ছেন অন্যদিকে ‘ইউনি প্রাইমের’ পরিবেশকেরা ব্যবসায়ীক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন।
এবিষয়ে বিএসটিআই কুমিল্লা জেলা অফিসের ফিল্ড অফিসার ইকবাল আহাম্মদ জানান, অভিযোগ পেয়ে মেসার্স মা ট্রেডার্সে গিয়ে ‘ইউনি প্রাইমের’ মোড়কের তেল পাওয়া যায়। সেখানে প্রতিষ্ঠান মালিক মো: ইব্রাহিম খলিলকে সতর্ক করা হয়। ‘ইউনি প্রাইমের’ মোড়ক ব্যবহার না করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। যদি তারা নির্দেশনা অমান্য করে এখনো ‘ইউনি প্রাইমের’ মোড়ক ব্যবহার করে তেল বিক্রি চলমান রাখে তবে অভিযান পরিচালনা করা হবে।
অভিযোগের বিষয়ে মেসার্স মা ট্রেডার্সের মালিক মো: ইব্রাহিম খলিল জানান, বিএসটিআই অফিস থেকে অফিসার এসে সতর্ক করার পর তারা আর ‘ইউনি প্রাইমের’ মোড়ক ব্যবহার করে তেল বিক্রি করছে না। তাদের প্রতিষ্ঠানে ইউনি প্রাইমের কোন পণ্য নেই।
মো: ইব্রাহিম খলিল তেল বিক্রির বিষয়টি অস্বীকার করলেও বাস্তবতা ভিন্ন। কয়েকটি সূত্র নিশ্চিত করেছে রাতের বেলায় ট্রাকে করে মা ট্রেডার্সে তেলের বোতল ঢুকছে। আর সেই বোতলে ‘ইউনি প্রাইমের’ লেবেল লাগিয়ে বিভিন্ন বাজারে ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। বিএসটিআই অফিসের চোখ এড়াতে দিনের পরিবর্তে রাতে ভেজাল সয়াবিন ও সুপার তেলের বোতলে ‘ইউনি প্রাইমের’ লেবেল-মোড়ক লাগিয়ে বাজারে ছাড়ছেন ইব্রাহিম খলিল।